‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরী আর নেই
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক সংসদ উপনেতা ও মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী আর নেই। বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, বুধবার দুপুরের দিকে মতিয়া চৌধুরী এভার কেয়ার হাসপাতালে মারা গেছেন।
এভার কেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল সার্ভিসেস পরিচালক ডা. আরিফ মাহমুদ জানান, বুধবার দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে মতিয়া চৌধুরী মারা যান।
ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি করে আসা মতিয়া চৌধুরী পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে খ্যাতি পান তিনি।
মতিয়া চৌধুরীর জন্ম ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী। তিনি ইডেন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ সালে ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং এর কার্যকরী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭০ ও ১৯৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, তদবির এবং আহতদের শুশ্রুষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।
স্বাধীনতার পরে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর তিনি দলটির হয়ে বিভিন্ন আন্দোলনে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সামরিক বিভিন্ন সরকারের সময় কারাবরণ করেন।
১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের ১ নম্বর প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেন। তিনি সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় সংসদ বিলুপ্তের মাধ্যমে সংসদ সদস্য পদ হারান তিনি।