বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হয়েগেল আমুকোনা-বেতাপুর গ্রামবাসীর মিলন মেলা
বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হয়েগেল আমুকোনা-বেতাপুর গ্রামবাসীর মিলন মেলা ২০২৪
নবীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গ্রাম আমুকোনা ও বেতাপুরের প্রবাসী বাসিন্দাদের একত্রিত করে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের ওয়ালসল শহরে আয়োজিত হয় এক আনন্দঘন মিলন মেলা। এই আয়োজনে উভয় গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী পরিবারের সদস্যরাও অংশগ্রহণ করেন, যা ছিল প্রবাসে গ্রামবাসীদের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ওয়ালসলের ইয়াসমিন হলে আয়োজিত হয় এই মিলন মেলা, যেখানে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আসা আমুকোনা ও বেতাপুর গ্রামের বাসিন্দারা সমবেত হন। মিলন মেলার আয়োজনে ছিল প্রাণবন্ত পরিবেশ, যা প্রবাসে থেকেও গ্রামের মাটির টান অনুভব করায়।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মোঃ মঈনূল আমিন বুলবুল, যিনি তার দায়িত্ব অত্যন্ত যত্ন সহকারে পালন করেন। এছাড়া আয়োজনের সফল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন শামছুল ইসলাম চৌধুরী, রাজীব চৌধুরী, আব্দুস সহীদ চৌধুরী, জাকারিয়া রহমান সরদার, শাকিল আহমেদ চৌধুরী এবং আব্দুস সহীদ সরদার। অনুষ্ঠানটির সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিচালনায় ছিলেন আব্দাল হুসেন চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন।
এই মিলন মেলার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রবাসী গ্রামবাসীদের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন এবং প্রবাসেও গ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে জীবিত রাখা। গ্রামবাসীরা তাদের স্কুল জীবনের স্মৃতি, শৈশবের কাহিনি এবং পুরনো দিনের মধুর স্মৃতিগুলো একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন। এতে তাদের মধ্যে নতুন করে বন্ধন সৃষ্টি হয় এবং প্রবাসে থেকেও গ্রামকে মনে করার এক দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি হয়।
অনুষ্ঠানে শিশু, কিশোর, নারী এবং পুরুষদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল বিভিন্ন দেশীয় খেলা, যার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ ছিল মিউজিক্যাল চেয়ার, রশি টান, পেনাল্টি শট আউট, হাড়ি ভাঙা এবং আরও নানা ধরনের গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলা। প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা অত্যন্ত উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেন এবং দর্শকদের করতালি ও উল্লাসে প্রতিটি খেলা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়, যা তাদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তোলে।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা বলেন, এই ধরনের আয়োজন তাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে এবং প্রবাসেও গ্রামের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখার একটি সুন্দর উপায়। তারা আরও জানান, এই ধরনের মিলন মেলা গ্রামবাসীদের মধ্যে নতুন করে সেতুবন্ধ তৈরি করে এবং প্রবাসে থেকেও তারা একে অপরের পাশে থাকতে পারেন।
এ আয়োজনে আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল র্যাফল ড্র, যেখানে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে থেকে কয়েকজন ভাগ্যবান প্রতিযোগী পুরস্কার জিতে নেন। র্যাফল ড্রতে অংশগ্রহণকারীরা পুরো অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেন, যা সকলের মাঝে উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করে।
আয়োজকরা জানান, তারা প্রতি বছর এই ধরনের সুন্দর আয়োজন অব্যাহত রাখবেন এবং আগামী বছরও আরও বড় আকারে এ ধরনের মিলন মেলার আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে প্রবাসেও গ্রামের ঐতিহ্য এবং বন্ধন জীবিত থাকবে এবং নতুন প্রজন্মের মাঝেও এই সম্পর্ক ধরে রাখা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আয়োজকরা সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং এই মিলন মেলার স্মৃতিময় মুহূর্তগুলোকে মনে রেখে আগামী বছরের জন্য প্রতীক্ষা করতে বলেন।