স্থানীয় ভাষায় খুতবাহ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হয়
স্থানীয় ভাষায় খুতবাহ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হয়
খায়রুল হুদা খান
আরবিতে খুতবাহ দিলে মানুষ বুঝতে পারেন না, সে হিসেবে স্থানীয় ভাষায় খুতবাহ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হয়। আবার জুমুআর খুতবাহ কেবল সাধারণ বয়ান বা নসীহতও নয়, যেটা খুতবাহর বিভিন্ন শর্তাবলী থেকে অনুমিত হয়। কুরআনে কারীমে আল্লাহ পাক কুরআনকে ‘যিকর’ বলেছেন, নামাযকেও ‘যিকর’ বলেছেন, জুমুআর খুতবাহকেও ‘যিকর’ বলেছেন। যেভাবে কুরআন তিলাওয়াত এবং নামায দুইটিই ইবাদত, জুমুআর খুতবাহও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত। তাছাড়া হাদীস শরীফে জুমুআর দুইটি খুতবাহকে যুহরের দুই রাকাত নামাযের স্থলাভিষিক্তও বলা হয়েছে। সুতরাং কুরআন তিলাওয়াত, নামায, আযান ইত্যাদি ইবাদতের মতই জুমুআর খুতবাহও আরবীতেই হওয়া বাঞ্চনীয় বলে চার মাযহাবের জমহুর উলামাগণ ফতওয়া দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর যামানা থেকে নিয়ে সাহাবায়ে কিরামের যামানা এবং পরবর্তীতে তাবেঈ-তাবে তাবেঈদের যামানায়ও দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ বিজিত হলেও কেউ জুমুআর খুতবাহকে পরিবর্তন করেন নি।
আবার, যেহেতু জুমুআর খুতবায় মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষনীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়, সে হিসেবে খুতবাহর আযানের আগে আরবী খুতবার বিষয়বস্তু স্থানীয় ভাষায় আলোচনার প্রচলন আছে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে। এতে ইবাদত হিসেবে আরবিতে খুতবাহ পাঠের সুন্নাহও নিংসন্দেহে (কোন বিদআত ছাড়াই) আদায় হলো আবার স্থানীয় ভাষায় মানুষের নসীহার কাজও হয়ে গেলো৷ এটাকে বিদআত বলারও সুযোগ নেই কারন, হাদীস শরীফে হযরত আবু হুরাইরা (রা.) এবং আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রা.) জুমুআর খুতবার আগে বয়ান করতেন বলে বিশুদ্ধ বর্ণনায় পাওয়া যায়।
আলহামদুলিল্লাহ, যুগ যুগ ধরে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত এই প্রথার সাথে মিল রেখে আমাদের মসজিদেও জুমুআর খুতবাহর মূল বিষয়বস্তু প্রথমে বাংলায় এবং পরে ইংরেজিতে আলোচনা করা হয়। কাবলাল জুমুআ সুন্নাত নামাযের পরেই খুতবাহর আযান দিয়ে আরবি খুতবাহ পাঠ করা হয় এবং ইকামত দিয়ে জুমুআর নামায আদায় করা হয়।