কাঁঠাল কেন খাবেন?
মৌসুমী ফল কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে এখন। সুস্বাদু এই ফলের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কাঁঠালে ভিটামিন সি, এ, থায়ামিন, রিবোফ্লোবিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, সোডিয়াম, ফোলিক এসিড থাকে।
এছাড়া কাঁঠালে মিনারেল, ফাইবার, প্রোটিন থাকে। এতে ফ্যাট নেই, ক্ষতিকর কোলেস্টেরলও নেই। এটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল। এ কারণে তা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা এই করোনাকালে বেশ জরুরি। দারুণ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফল আমাদের বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকেও রক্ষা করে। যেমন:
* ক্যানসার প্রতিরোধক: কাঁঠালে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট আছে। এছাড়া এতে ভিটামিন সি বেশি থাকায় ফলটি ফুসফুস ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসার, গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, স্কিন ক্যানসার ও প্রোস্টেট ক্যানসারের মতো বিভিন্ন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
* ওজন কমায়: কাঁঠালে ফ্যাট না থাকা ও ক্যালরি কম থাকায় এই ফল খাওয়াতে ওজন কমে ও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
* রক্তচাপ কমায়: কাঁঠালে পটাশিয়াম বেশি থাকায় তা রক্তচাপ কমায়, এর ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোকের মতো রোগ প্রতিরোধ হয়।
* হজম শক্তি বাড়ায়: কাঁঠালে ফাইবার বা আঁশ বেশি থাকায় তা হজম শক্তি বাড়ায়। পরিমাণে বেশি খেয়ে ফেললেও পাকস্থলীতে বিরূপ প্রভাব ফেলে না। এছাড়া কাঁঠাল বাওয়েল মুভমেন্ট উন্নত করে। শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে কোলন সুস্থ রাখে কাঁঠাল।
* ইনসোমনিয়া দূর করে: অনেকেই ইনসোমনিয়া অর্থাৎ ঘুমের ব্যাঘাতে ভোগেন। তাদের জন্য কাঁঠাল বেশ উপকারী। এতে ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন বেশি থাকায় ফলটি খেলে ঘুম ভালো হয়।
* ডায়াবেটিসের জন্য ক্ষতিকর নয়: যদিও কাঁঠাল খেতে খুব মিষ্টি হয়, কিন্তু তা থেকে খুব ধীরে ধীরে রক্তে সুগার শোষণ হয়। এ কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কাঁঠাল ক্ষতিকর না।
* চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারি: কাঁঠালে ভিটামিন এ বেশি থাকায় তা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়া দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া ও চোখে ছানি পড়া রোগ থেকে রক্ষা করে। বয়স বাড়ার কারণে ত্বক কুঁচকে যাওয়া সমস্যা দূর করে কাঁঠাল। রোগে পুড়ে যাওয়া ত্বক ভালো করে।
* আলসার প্রতিরোধ করে: আলসারের মতো পেটের পীড়ার জন্য যারা ওষুধ সেবন করেন, তারা সেসব ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতেও ভোগেন। এক্ষেত্রে আলসার প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপায় হলো কাঁঠাল খাওয়া। কারণ এতে অ্যান্টি আলসারেটিভ,অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে প্রচুর।
* হাড়ের যত্নে: কাঁঠালে যেহেতু পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম থাকে, তাই হাড়ের যত্নে এই ফল বেশ উপকারি। এতে ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় তা শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে ভালো ভূমিকা রাখে।
* মস্তিষ্কের জন্য উপকারী: নার্ভাস সিস্টেমের সমস্যায় ক্লান্তি, মানসিক চাপ ও মাংসপেশী ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলে কাঁঠাল খান নিয়মিত। এতে থাকা থিয়ামিন ও নিয়াসিন মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী।
গবেষকরা এখনো কাঁঠালের নতুন সব উপকারিতা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শরীরের অন্য সব রোগ ও সমস্যা দূর করতে কাঁঠালের আরো কিছু উপকারিতার কথাও হয়তো আমরা শিগগিরই জানতে পারবো।