সোমবার , ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Monday , 23 December 2024
২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দিনাজপুরে শীতের দাপট, তাপমাত্রা নামলো ১০ ডিগ্রির ঘরে

দিনাজপুরে শীতের দাপট, তাপমাত্রা নামলো ১০ ডিগ্রির ঘরে
ছবি: সংগৃহীত

পৌষের ঘরে পা রাখেনি শীত। তার আগেই উত্তরের জনপদে দাপট দেখাচ্ছে এ ঋতু। অবশ্য হিমালয়ঘেঁষা এ জনপদে শীত একটু আগেভাগেই আবির্ভূত হয়। যেমনটা দেখা যাচ্ছে গত বেশ কয়েকদিন ধরে। শীত পুরোপুরি জেঁকে বসেছে এ অঞ্চলে। তাপমাত্রা কমছে ক্রমশ। গতকালের কনকনে ঠান্ডা হাওয়া ছাপিয়ে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড গড়লো দিনাজপুর।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় দিনাজপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, শনিবার সকাল ৬টায় দিনাজপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১ কিলোমিটার। এর আগের দিন শুক্রবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ছিল সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ এবং গতিবেগ ঘণ্টায় ১ থেকে ২ কিলোমিটার।
তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও সকালে উঠেছে সূর্য কিন্তু প্রখরতা একেবারেই কম। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা ঠিকভাবে কাজে যেতে পারছেন না কিংবা কাজে গেলেও ঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না, ফলে তাদের আয় উপার্জনে ভাটা পড়েছে।
সকালে কথা হয় দিনাজপুরের রাজবাটি এলাকার লতিফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি পেশায় একজন অটোচালক। তিনি জানান, এই শীতের মধ্যে অটো চালাতে খুব কষ্ট। সারা দিন যখন গরম থাকে তখন যাত্রী পাওয়া যায় আর চালানো যায়। কিন্তু সন্ধ্যার পর কিংবা খুব সকালে যাত্রীও তেমন পাওয়া যায় না, আর শীতের কারণে অটো ঠিকভাবে চালানো যায় না। ফলে আয় উপার্জন কমে গেছে।
শ্রমিক আবুল হোসেন বলেন, ‘সকালের দিকে আর সন্ধ্যা থেকে শীতের অনুভূতি বেশি হচ্ছে। সকালে কুয়াশা আর শীতটা বেশি থাকে। সকাল ১০টার পরে শীতের তীব্রতা কমে গেলে তখন কাজে যাচ্ছি।’
অটোচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সকালবেলা মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না, আবার সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বাসায় ফিরছে। কয়েকদিন থেকে ভাড়া কম হচ্ছে। কারণ সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা বাড়ছে। পরের দিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।’
কালিতলা এলাকার ষাটোর্ধ্ব দিনমজুর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই শীতের সময়টাতে খুব কষ্ট হয়। ঠিকভাবে কাজ করা যায় না। আবার কাজ না করলে সংসার চালানোটাও দায়। তাই দু-দিন কাজ করি আর একদিন রেস্ট নিই।’
দিনাজপুর সদর উপজেলার বলতৈর এলাকার কৃষক সেলিম রেজা বলেন, ‘এই সময়টা আলুর বীজ বপনের মৌসুম। কিন্তু এভাবে ঘন কুয়াশা হলে বীজ থেকে ঠিকভাবে চারা গজাবে না আবার চারা গজালেও সেগুলোতে রোগবালাই দেখা দেবে। সেটা নিয়েই একটু চিন্তায় আছি।’
সদর উপজেলার দক্ষিণনগর এলাকার কৃষক সরকার জানান, শুধু আলু নয়, এই সময়টা বোরো তলা তৈরির সময়। এভাবে কুয়াশা আর ঠান্ডা হলে ধানের বীজ থেকেও চারা গজাতে সমস্যা হয়। আবার টমেটোসহ বিভিন্ন ফসলেও সমস্যা দেখা দেয়।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়