মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধুর ছবি-ম্যুরাল ভাঙচুর
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেছেন যুবদল নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবরুদ্ধ করে তোপের মুখে নানা প্রশ্ন করেন। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে বন্দর ১ নং খেয়া ঘাট সংলগ্ন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকালে বন্দর থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল বিএনপি ও যুবদল নেতাকর্মী মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে প্রবেশ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেন। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ভবনের ভেতরে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে ফেলে নানা প্রশ্ন করে। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ করাসহ মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করা হবে বলেও হুমকি দেন যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির। এখানে যারা মুক্তিযোদ্ধা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সেখানে বসে আছে তারা এ দেশের নাগরিক না। এমনকি তারা আওয়ামী লীগের দোসর ও ভারতের দালাল বলে অবিহিত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও মুক্তিযোদ্ধা অফিস বন্ধ করার ঘোষণা দেন যুবদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বন্দর থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। অথচ তার দোসররা এখানও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সাঁটিয়ে রেখেছে। এতেই প্রমাণ হয়, এরা তাদের দোসর। আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর সব ছবি ভেঙে দিয়েছি। আর ভেতরে যারা বসে আছে, তারা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও হাসিনার দালাল। দেশকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে তারা। এ জন্য তাদেরকে ভেতরে বসিয়ে রেখেছি। এখন আমরা বিএনপির ভাইয়েরা মিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
ভাঙচুরের সময় কমপ্লেক্সে উপস্থিত থাকা বন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার কাজী নাসির উদ্দিন বলেন, আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে বন্দর উপজেলা কমপ্লেক্সে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সেই উদ্দেশে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে গিয়েছিলাম। ওই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ওসিকে কমপ্লেক্সটি পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ করেছিলাম। গত ৫ আগস্টের পর আমাদের বন্দর উপজেলা কমপ্লেক্সে একটি চুরি ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় অফিসের কম্পিউটারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। সেজন্যই আমরা ওনাদের কমপ্লেক্সটি পরিদর্শনের অনুরোধ করায় তারা পরিদর্শনে এসেছিলেন। তবে ওনারা চলে যাওয়ার পরপরই এই ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে।
তিনি আরও বলেন, কমপ্লেক্সের ভেতরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনও ছবি টানানো ছিল না। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ছবি টানানো ছিল। তারা ভেতরে এসে সেই ছবিসহ সব ছবি ভাঙচুর করেন। পরে তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে কমপ্লেক্সের চাবি নিয়ে গেছে।
বন্দর থানার ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, সেখানে শুধুমাত্র ছবি নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইমাম বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে কারা ভাঙচুর করেছে তা জানা নেই। এ নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।